বুধবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১০

যুক্তরাষ্ট্রের গোপন তথ্য ফাঁস করলো উইকিলিকস

উইকিলিকসের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বিবেচনা করছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি গোপন নথি প্রকাশের বিষয়টিকে অপরাধ হিসেবেই দেখছে। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন গোপন নথি প্রকাশের বিষয়টিকে মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর হামলা বলে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, এসব তথ্য ‘চুরির’ সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

চীন উইকিলিকসের তথ্য ফাঁসের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতি যথাযথভাবে মোকাবিলা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এ দিকে উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জকে কোনো শর্ত ছাড়াই আশ্রয় দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ ইকুয়েডর। বিভিন্ন দেশের সরকারের বিব্রতকর তথ্য ফাঁসের জন্য আলোচিত ওয়েবসাইট উইকিলিকস গত রোববার আড়াই লাখেরও বেশি মার্কিন গোপন নথি প্রকাশ করে। গত মাসে ইরাক যুদ্ধের প্রায় চার লাখ গোপন নথি প্রকাশ করে ওয়েবসাইটটি। এ ছাড়া গত জুলাইয়ে প্রকাশ করে আফগান যুদ্ধের বিষয়ে মার্কিন বাহিনীর ৯২ হাজার গোপন নথি। হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব রবার্ট গিবস জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা উইকিলকিস প্রসঙ্গে অবগত আছেন। গিবস বলেন, ‘এসব গোপন তথ্য চুরি ও প্রকাশ করা এক ধরনের অপরাধ।’ হোয়াইট হাউসে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন গিবস। ওবামা প্রশাসন কি উইকিলিকসের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বিবেচনা করছে— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের সরাসরি কোনো জবাব না দিলেও তা নাকচ করেননি তিনি। হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব বলেন, এসব নথি প্রকাশের ফলে আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতে এর প্রভাব পড়বে, তা আমি বিশ্বাস করি না।’ তিনি জানান, এ ঘটনার তদন্ত চলছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন বলেন, নিজেদের স্বার্থে সব দেশ একে অপরের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় আলোচনা করতে পারে বা সম্পর্ক তৈরি করতে পারে। তাই উইকিলিকস যেসব তথ্য প্রকাশ করেছে, তা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে প্রভাব ফেলবে না। তিনি আরও বলেন, ‘নথি প্রকাশের ঘটনায় অনেকের জীবন ঝুঁকির মুখে পড়েছে। আমাদের জাতীয় নিরাপত্তাও হুমকির মুখে পড়েছে।
মার্কিন বিচার বিভাগ জানিয়েছে, উইকিলিকসের তথ্য ফাঁসের ঘটনায় তদন্ত চলছে। হোয়াইট হাউস, পররাষ্ট্র দপ্তর ও পেন্টাগন জানিয়েছে, ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা রোধে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হং লেই বলেছেন, চীন আশা করে গোপন তথ্য ফাঁসের বিষয়টি যথাযথভাবে মোকাবিলা করবে।  বেইজিংয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘আমরা চাই না গোপন নথি প্রকাশকে কেন্দ্র করে বেইজিং-ওয়াশিংটন সম্পর্কে টানাপড়েন সৃষ্টি হোক।’
এদিকে ইকুয়েডর উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা অ্যাসাঞ্জকে সে দেশে আশ্রয় দেওয়ার প্রস্তাব করেছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিনট্টো লুকাস বলেন, ‘আমরা বিনাশর্তে ও কোনো ঝামেলা ছাড়াই তাঁকে ইকুয়েডরে আশ্রয় দিতে প্রস্তুত।’

এএফপি, বিবিসি, রয়টার্স।*
(*খবরটি প্রথম আলো থেকে নেওয়া হয়েছ)

আপডেট-১

উইকিলিকসে যুক্তরাস্ট্রের ইরাক যুদ্ধের নথি প্রকাশের পর পরই টুইটার, ফেসবুক সহ নানা সামাজিক নেটওয়ার্কে উইকিলিকসের উপর আলোচনার ঝড় বইতে থাকে এবং গুগলেও সর্বাধিক সার্চ হয়। সবাই উইকিলিকসের টরেন্ট ফাইল ডাউনলোড দেওয়াতে ব্যান্ডউইথ সমস্যাও দেখা দেয়। আরেকটা মজার বেপার হলো উইকিলিকস এমনভাবে তথ্যগুলোকে (এমনকি সম্পূর্ণ ওয়েবসাইটটিকে) ডাউনলোডেবল করে রেখেছে যে, সাইটি বন্ধ হয়ে গেলেও সম্পূর্ণ ওয়েবসাইটির কপি থেকে যাবে অনেকের কাছে।

আজ সকালে চীন রাস্ট্রিয়ভাবে সাইটটি ব্লক করে দিয়েছে।

আপডেট-২

ইন্টারপোল উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা Julian Assange এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। উইকিলিকসের কাজের বেপারেই একবার সুইডেন গিয়ে তিনি নরীঘটিতে কেলেংকারিতে জারিয়ে পড়েন বলে-অভিযোগ করা হয়। সুইডেন সরকার এরেষ্টনামা EAW (European Arrest Warrant) এর কাছে হস্তগত করেছে। গার্ডিয়ানের খবরে তার লন্ডনের ভক্তদের আশ্রয়ে থাকার সম্ভাবনা উল্লেখ করে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন